বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম।

By আসিফ ইকবাল বাদশা 

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম, মার্চেন্ট একাউন্টের সুবিধা, মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে কী কী লাগে।

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম।How to open bkash merchant account।

আপনি যদি একজন ব্যাবসায়ী হন এবং আপনার কাস্টোমারদের কাছ থেকে হাতে হাতে নগদ পেমেন্টের পাশাপাশি বিকাশের মাধ্যমে ও পেমেন্ট নিতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই একাটি বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে হবে। তো চলুন আজকে আমি আপনাদের বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম শেখাবো।

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তি দিন দিন উন্নত থেকে উন্ননতর হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিকাশ ও নিয়ে এসেছে অভিনব সেবা। যে সেবার নাম মার্চেন্ট। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা এখনও জানেন না যে, মার্চেন্ট একাউন্ট কি বা এর কাজ কি।

তাই বিষয়টা সুন্দর ভাবে বোঝানের জন্য এবং আপনাদের মনের সকল সংসয় দুর করার জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা। লেখাটি পড়ার পর আপনারা বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট বিষয়ে সকল তথ্য জানতে পারবেন। 

Index:

1.বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট কি বা কাকে বলে।

2.বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের সুবিধা ।

3.বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে।

4.বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম ।

 4.1.অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে বিকাশ         মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম। 

 4.2.বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিস থেকে মার্চেন্ট   একাউন্ট খোলার নিয়ম।

5. FAQ.

৬. আমাদের শেষ কথা।

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট কি বা কাকে বলে?

ব্যাবসা বানিজ্যের ক্ষেত্রে, বিকাশের যে একাউন্ট ব্যবহার করে ক্রেতাদের কাছ থেকে বিক্রেতা মালামালের পেমেন্ট গ্রহণ করে থাকে তাকেই মূলত বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট বলে। 

বিকাশে মার্চেন্ট সেবা যোগ হওয়ার পর থেকে ব্যাবসা বানিজ্যের লেনদেন আগের থেকে অনেক সহজ হয়েছে। এখন আপনি ঘরে বসে যে কোন পণ্য অডার করে, বিকাশের পেমেন্ট (Payment) অপশনে গিয়ে তার দাম দিয়ে দিতে পারেন। 

কোন জিনিস কেনার জন্য এখন কষ্ট করে, সময় ব্যায় করে মার্কেটে যাওয়ার আর প্রয়োজন পড়বে না। আর এটাই মূলত বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের কাজ।

জানুন..বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম 

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের সুবিধা 

অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, আমি তো সেন্ড মানি করে উক্ত পেমেন্টটি করতে পারি তাহলে কেন শুধু শুধু মার্চেন্ট একাউন্ট খুলবো ? মার্চেন্ট একাউন্টে কি বাড়তি কোন সুবিধা পাওয়া যায়?


হ্যা, সাধারণ বিকাশ একাউন্টের চেয়ে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টে বেশ কিছু বারতি সুবিধা পাওয়া যায়। যেমনঃ

  • লেনদেনের কোন সীমাবদ্ধতা নেই। আপনি যত ইচ্ছা তত টাকা ইন আউট করতে পারবেন। এক টাকা থেকে শুরু করে আপনার ইচ্ছা মত অংকের টাকা লেনদেন করতে পারবেন।
  • আপনার পণ্য প্রচারের জন্য ক্রেতাদের নানা রকম অফার দিতে পারবেন।
  • মার্চেন্ট একাউন্ট সরাসরি ব্যাংক একাউন্টের সাথে সংযুক্ত থাকে। ফলে টাকা তোলার জন্য সাধারন বিকাশ একাউন্ট থেকে অনেক কম খরচ হয়।
  • আপনার পারসোনাল ব্যাবসায়িক ওয়েবসাইট বা অ্যাপে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে সরাসরি পেমেন্ট নিতে পারবেন।
  • কেনাকাটর ক্ষেত্রে সাধারণ একাউন্টের থেকে মার্চেন্ট একাউন্টে লেনদেনের খরচ তুলনামূলক কম।

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে?

  • একটি একটিভ/সক্রিয় সিমকার্ড।
  • অনুমোদিত ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান/দোকান।
  • এনআইডি/ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা পাসপোর্ট। 
  • ট্রেড লাইসেন্স।
  • টিন (TIN) সার্টিফিকেট।
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি। 
  • নিজস্ব ব্যাংক একাউন্ট। 
  • যথেষ্ট পরিমাণে পেমেন্ট গ্রহণ।
  • পারসোনাল ওয়েবসাইট/অ্যাপস। (যদি থাকে)

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম 

দুই পদ্ধতিতে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলা যায়।

১. অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে।

২. নিকটস্থ বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে গিয়ে।

অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম 

  1. মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম এই লিংকে https://www.bkash.com/i-want-register/send-registration-request ভিজিট করতে হবে।
  2. আপনাদের সমনে উপরের ছবির মত একটি পেজ ওপেন হবে। এখনে মার্চেন্ট এ ক্লিক করুন।
  3. ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের নাম - এ আপনার দোকান/ প্রতিষ্ঠানের নাম লিখুন।
  4. কার্যালয় এর ঠিকানা- তে আপনার দোকান/ প্রতিষ্ঠান কোথায় অবস্থিত সেই ঠিকানা লিখুন। 
  5. ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থান- এ প্রতিষ্ঠানের বিবরণ লিখুন।
  6. প্রতি মাসে পেমেন্ট গ্রহনের পরিমাণ (আনুমানিক)- এ এক মাসে আপনার আনুমানিক কত লেনদেন হয় তা লিখুন।
  7. যিনি মার্চেন্ট হতে চান তার নাম- এ যে ব্যক্তি মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে চায় তার অর্থাৎ আপনার নাম নাম লিখুন। 
  8. ফটো আইডি নাম্বার - এ এন আইডি বা স্মার্টআইডি/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স যে কোন একটির নাম্বার প্রদান করুন।
  9. মেয়াদসহ ট্রেড লাইসেন্স নাম্বার - এ আপনার ট্রেড লাইসেন্স নাম্বার দিন।
  10. ই মেইল-এ আপনার পারসোনাল/ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের জিমেইল জি মেইল একাউন্ট প্রদান করুন। 
  11. ক্যাপচাটি পূরন করুন।
  12. সর্বশেষ জমা দিন বাটনে ক্লিক করে আপনার মার্চেন্ট একাউন্টের  আবেদন করুন।

বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিস থেকে মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম 

উপরে বর্ণিত প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস নিয়ে নিকটস্থ বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে উপস্থিত হন এবং তাদেরকে মার্চেন্ট একাউন্ট খুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করুন।

আপনার সকল কাগজ পত্র ও তথ্য যাচাই করার পর, তারা আপনাকে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলে দিবে। এখানে আপনার তেমন কোন কাজ নেই।

নোটঃ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে বিকাশ সাধারণ একাউন্ট খুলতে হবে।

FAQ#

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট ক্যাশ আউট চার্জ কত?

বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট থেকে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টে ক্যাশ আউট চার্জ কিছুটা কম। পার্সোনাল একাউন্টের ক্যাশ আউট চার্জ ১.৮৫% এবং মার্চেন্ট একাউন্টের ক্যাশ আউট চার্জ ১.৭০%. 

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট চার্জ/বিকাশ মার্চন্ট একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে ?

বিকাশ মার্চন্ট একাউন্ট খুলতে কোন টাকা লাগে না। একবারে ফ্রিতে খোলা যায় বিকাশ মার্চন্ট একাউন্ট।

বিকাশ মার্চন্ট একাউন্টের লিমিট কত বা কত টাকা লেনদেন করা যায় 

মার্চন্ট একাউন্টের লেনদেনের কোন লিমিট বা সীমা নেই। ইচ্ছা মত লেনদেন করা যায়। প্রতিদিন এক টাকা থেকে শুরু করে আপনার পছন্দ মত এমাউন্ট লেনদেন করতে পারবেন আপনার মার্চন্ট একাউন্ট থেকে।

মার্চন্ট একাউন্টে টাকা পাঠানোর নিয়ম কি ?

পার্সোনাল একাউন্ট এবং মার্চেন্ট একাউন্ট থেকে টাকা পাঠানোর নিয়ম একই। 

বিকাশ অ্যাপ অথবা USSD CODE ডায়াল করে পেমেন্ট অপশানে গিয়ে টাকার পরমাণ, পিন নাম্বার দিয়ে ট্যাপ করে ধরে রাখতে হবে।

বিকাশ মার্চেন্ট নাম্বার কি ?

মার্চন্ট নাম্বার বলে আলাদা কোন নাম্বার নেই। আপনি যে নাম্বারে মার্চেন্ট একাউন্ট খুলবেন সেটাই আপনার মার্চেন্ট নাম্বার

শেষ কথাঃ আশা করি আপনারা বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন। এ সম্পর্কে কোন প্রশ্ন বা মন্তব থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।

বিকাশ এবং ব্যাংকিং সম্পর্কিত আরও তথ্য জানতে নিচের লিংকে ভিজিট করুন। 



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url