বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম, রেজিষ্ট্রেশন করার নিয়ম, অনলাইনে বিকাশ এজেন্ট একাউন্টের জন্য আবেদন করার নিয়ম।
বর্তমান বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরণের মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস (বিকাশ, নগদ, রকেট ইত্যাদি) থাকলে ও জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিকাশ সবথেকে শীর্ষে অবস্থান করছে।
কারণ বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গুলোর মধ্যে বিকাশ সবথেকে পুরোনো। আর সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে তারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সাথে যুক্ত করে চলেছে নতুন নতুন সব যুগোপযোগী ফিচার। যা একজন বিকাশ ইউজারকে দিনের পর দিন নানা ভাবে সহযোগিতা করে চলেছে।
চাইলে আপনি ও একটি একটি বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলে। তার মাধ্যমে মোটামুটি পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যা আপনাকে আর্থিক ভাবে ও সাবলম্বি হতে সাহায্য করবে।
index:
1.বিকাশ এজেন্ট কী।2.বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে।
3. বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে।
4. বিকাশ এজেন্ট হওয়ার শর্ত।
5. বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম।
5.1. নিজের দোকান থেকে বিকাশ বিক্রয় প্রতিনিধির মাধ্যমে এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম।
5.2. স্বশরীরে বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে গিয়ে এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম।
5.3. অনলাইনে বিকাশ এজেন্ট একাউন্টের জন্য আবেদন করে এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম।
6. বিকাশ এজেন্টের লাভ/কমিশন।
7.বিকাশ এজেন্ট সিম কোথায় পাব।
8.আমাদের শেষ কথা।
9. বিকাশ সম্পর্কে আরও তথ্য।
আরও জানুন.. বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
বিকাশ এজেন্ট কী?
এজেন্ট শব্দের অর্থ প্রতিনিধি। বিকাশ এজেন্ট অর্থ হল বিকাশ প্রতিনিধি। একজন বিকাশ এজেন্ট সাধারণত গ্রাহকদের পারসোনাল বিকাশ একাউন্ট খোলা, ক্যাশ আউট, ক্যাশ ইন সহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করে থাকে।
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে?
- ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান বা দোকান (জনবহুল জায়গা, বাজার অথবা কয়েক রাস্তার মোড়ে হলে সবথেকে ভালো হয়)।
- ট্রেড লাইসেন্স।
- এন আইডি কার্ড।
- পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি।
- একটি একটিভ/সক্রিয় সিম কার্ড (নিজের নামে রেজিষ্ট্রেশন করা এবং আগে বিকাশ একাউন্ট খোলা নাই এমন)।
- টিন (TIN) সার্টিফিকেট। (আপনি এ দেশের একজন নিবন্ধিত করদাতা তার প্রমাণ স্বরূপ)
নোটঃ এইলিংকে https://secure.incometax.gov.bd/Registration/Index ভিজিট করে আপনার এন আইডি কার্ড দিয়ে, টিন সার্টফিকেটের ফর্ম পূরণ করে, ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে অথবা কত টাকা জমা দিতে হয়?
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য কোন টাকা লাগে না বা কোন টাকা জমা দিতে হয়না।
তবে এজেন্ট একাউন্ট খোলার সময় নিজের একাউন্টে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা রিচার্জ করতে হয়।
স্থান ভেদে কম বেশি হতে পারে। গ্রাম অঞ্চলে ২০ থেকে৫০ হাজার। শহর অঞ্চলে ১ থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করা লাগতে পারে।
বিকাশ এজেন্ট হওয়ার শর্ত বা রিকয়ারমেন্ট
আপনি যদি বিকাশ এজেন্ট হতে চান তাহলে আপনাককে অবশ্যই বিকাশের নির্দিষ্ট কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে। তা হলে বিকাশ কতৃক আপনার এজেন্টটি বাতিল করে দেওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
- একাউন্ট খোলার সময় আপনাকে দোকানের/ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান ভেদে ৫০ হাজার বা ১ লক্ষ টাকা রিচার্য করতে হবে।
- সবসময় একটি নির্দিষ্ট পরিমান ব্যালেন্স (৭০০০ টাকা) আপনার বিকাশ একাউন্টে রাখতে হবে।
- প্রতিমাসে নির্দিষ্ট পরিমাণে (৫ টি) বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খুলতে হবে।
- প্রতিদিন সর্বনিন্ম ২০০০ টাকা লেনদেন করতে হবে। (ক্যাশ ইন ক্যাশ আউট যে কোন একটি করলেই হবে)
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
বিকাশ পারসোনাল একাউন্ট ঘরে বসে নিজে নিজে খোলা গেলে ও বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে অবশ্যই বিকাশ বিক্রয় প্রতিনিধির সাহায্য নিতে হবে এবং নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মানতে হবে।
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য মোট তিনটি নিয়ম আছে।
- নিজের দোকান থেকে বিকাশ বিক্রয় প্রতিনিধির মাধ্যমে।
- স্বশরীরে বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে গিয়ে।
- অনলাইনে বিকাশ এজেন্টের জন্য আবেদন করে।
নিজের দোকান থেকে বিকাশ বিক্রয় প্রতিনিধির মাধ্যমে এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
উপরে বর্ণিত সকল ডকুমেন্টস একত্রিত করে বিকাশ বিক্রয় প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করুন। তার কাছে আপনার বিকাশ এজেন্ট হওয়ার ইচ্ছা জানান। তিনিই আপনাকে সকল কিছু বুঝিয়ে দিয়ে সহযোগিতা করবেন।
স্বশরীরে বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে গিয়ে এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
সর্বপ্রথম আপনাকে ১৬২৪৭ এই নাম্বারে কল দিয়ে আপনার নিকটস্থ বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের ঠিকানা জেনে নিতে হবে।
তারপর প্রয়োজনীয় সকল কাগজ পত্র নিয়ে অফিসে উপস্থিত হলে, অফিস কতৃপক্ষ আপনার আবেদনটি গ্রহণে করে, আপনার দোকান এবং সকল তথ্য পর্যাবেক্ষণ করবে। সব ঠিকঠাক থাকলে খুব তাড়াতাড়ি আপনাকে বিকাশ এজেন্টের জন্য অনুমোদন দিয়ে দিয়ে দেওয়া হবে।
অনলাইনে বিকাশ এজেন্ট একাউন্টের জন্য আবেদন করার নিয়ম
- ভিজিট করুন বিকাশের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে।
- এজেন্ট অপশনে ক্লিক করুন।
- এন আইডি অনুসারে আপনার নাম লিখুন।
- ট্রেড লাইসেন্স নাম্বার, বাবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা লিখুন।
- ই মেইলে- আপনার পার্সোনাল জি মেইল একাউন্টের নাম্বার লিখুন।
- ক্যাপচাটি পূরন করুন।
- সর্বশেষ জমা দিন বাটনে ক্লিক করে আপনার আবেদনটি সাবমিট করুন।
এখন অল্প কিছুদিনের ভেতর আপনাকে বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে ডেকে আপনার দোকান এবং সকল কাগজ পত্র যাচাই করা হবে।
বিকাশ কতৃপক্ষ আপনাকে এজেন্ট দেওয়ার উপযুক্ত মনে করলে, এজেন্টের জন্য তারা আপনাকে মনোনয়ন করে দিবে।
বিকাশ এজেন্টের লাভ/কমিশনের পরিমান
একজন বিকাশ এজেন্ট মূলত ক্যাশ আউট, ক্যাশ ইন এবং কাস্টোমারদের পারসোনাল একাউন্ট খুলে দেওয়ার মাধ্যমে কমিশন পেয়ে থাকে।
এছাড়াও মাঝে মাঝে বিকাশ অফিস থেকে বিভিন্ন রকম টার্গেট/অফার দেয়। যেটা পূরণ করতে পারলে বাড়তি কমিশন বা লাভ পাওয়া যায়।
বিকাশ এজেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন করলে করলে প্রতি হাজারে ৪.৫০ টাকা পাওয়া যায়।
আর USSD CODE (*247#) এর মাধ্যমে লেনদেন করলে প্রতি হাজারে ৪.১০ টাকা কমিশন হিসেবে পাওয়া যায়।
বিকাশ এজেন্ট সিম কোথায় পাওয়া যায়?
বিকাশ এজেন্ট সিম বলতে কিছু নাই। যে কোন অপারেটরের একটিভ সিম হলেই সেটাকে এজেন্ট সিম বানিয়ে নেওয়া যায়।
তবে সেটা নিজের নামে রেজিষ্ট্রেশন করা থাকতে হবে এবং উক্ত সিমে আগে বিকাশ একাউন্ট খোলা থাকলে হবে না।
আামদের শেষ কথাঃ আজকে আর্টিকেলে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
এখানে মোট তিনটি নিয়ম নিয়ে আলোচনা করা হলে ও আপনার জন্য বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর প্রতিনিধির মাধ্যমে এজেন্ট একাউন্ট খোলা সবথেকে সহজ হবে। তিনি নিজে আপনাকে বিস্তারিত সকল কিছু বুঝিয়ে দিবেন।
বিকাশ এবং ব্যাংকিং সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে নিচের লিংকে ভিজিট করুন।