ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম। deposit rules of e passports money

ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম

By আসিফ ইকবাল বাদশা 

ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম

আজকের আলেচনার বিষয় ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম। 

দিন যত যাচ্ছে প্রযুক্তি তত উন্নত হচ্ছে। আর প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, আমাদের কাজ তত সহজ থেকে আরও সহজতর হচ্ছে। পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে ও একই চিত্র দেখা যায়। এখন কষ্ট করে ব্যাংকে যেয়ে টাকা জমা দেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।

কারণ আপনি যদি চান, তাহলে এখন ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্টের টাকা জমা দিতে পারবেন। তো আজকে আমি আপনাদের সাথে ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করবো। যাতে আপনাদের প্রকার ঝামেলা/ দালালের ধোঁকায় পড়া না লাগে।

Index :

1..কত ভাবে ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়া যায়।

2.ব্যাংকে যেয়ে টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম।

৩.অনলাইনে টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম। 

৩.কোন কোন ব্যাংকে পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়া যায়।

৪.টাকা জমা দেওয়ার পরেও চালান ডাউনলোড করতে না পারলে করণীয়। 

  • ই পাসপোর্টের টাকা দুই ভাবে মা দেওয়া যায়।

১. নিজে সশরীরে ব্যাংকে যেয়ে টাকা জমা দেওয়া। 

২. অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে টাকা জমা দেওয়া।

নিজে সশরীরে ব্যাংকে যেয়ে টাকা জমা দেওয়ার নিয়মঃ

এই নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার মত তেমন কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না। কারণ যখন আপনি টাকা জমা দেওয়ার জন্য ব্যাংকে উপস্থিত হবেন, তখন ব্যাংক কর্মীরাই আপনাকে একের পর এক বলে দিবে কীভাবে কী করতে হবে। 

সেই কারণে এই পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে আমি আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করব না।

কোন কোন ব্যাংকে ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়া যায়ঃ

  • এ বি ব্যাংক।
  • অগ্রণী ব্যাংক। 
  • বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।
  • ব্র্যাক ব্যাংক।
  • ডাচ বাংলা ব্যাংক। 
  • ইস্টার্ণ ব্যাংক।
  • ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। 
  • ইসলামী ব্যাংক। 
  • মধুমতি ব্যাংক। 
  • মিডল্যান্ড ব্যাংক। 
  • NRB কমার্শিয়াল ব্যাংক।
  • ওয়ান ব্যাংক।
  • সোনালী ব্যাংক। 
  • সাউথ ইস্ট ব্যাংক।
  • প্রিমিয়ার ব্যাংক।
  • ট্রাষ্ট ব্যাংক।
  • মিউচুয়াল ট্রাষ্ট ব্যাংক।

অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে টাকা জমা দেওয়ার নিয়মঃ

আমার ব্যক্তিগত মতে অনলাইনের মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়াটাই সবথেকে নিরাপদ হবে। কারন এখানে আপনাকে কোন দালাদের ফাঁদে পড়তে হচ্ছে না। 

নিজে নিজেই A To Z সবকিছু করতে পারছেন। এজন্য আজকে আমি স্টেপ বাই স্টেপ আপনাদেরকে শেখাবো কিভাবে অনলাইনে ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম।

অনলাইনের মাধ্যমে ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়মঃ 

১. সর্বপ্রথম A Challan 

https://ibas.finance.gov.bd/acs/account/login?ReturnUrl=%2Facs%2F (Automated Challan) এ ক্লিক করে ওয়েবসাইটে যান। অথবা এ চালানের মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করে নিতে পারেন।

2.চিত্রে দেখানো পাসপোর্ট  এ ক্লিক করার পর, ই পাসপোর্ট ফি তে ক্লিক করতে হবে।

৩. এখানে পাসপোর্টের পৃষ্ঠার সংখ্যা (৪৮/৬৪) সিলেক্ট করতে হবে। তারপর আপনি কতদিন মেয়াদের( ৫/১০ বছর) এবং কোন ধরণের ডেলিভারি ( রেগুলার/ এক্সপ্রেস / সুপার এক্সপ্রেস) পেতে চান তা সিলেক্ট করে, ok বাটনে ক্লিক করতে হবে।

৪.এবার সনাক্তকরণ নাম্বার ( NID/জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী), নাম( অবশ্যই ইংরেজিতে),ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। চইলে আপনি জি-মেইল ও অ্যাড করতে পারেন। (Optional)

নোটঃ নাম লেখার সময় অবশ্যই একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন যাতে পাসপোর্টের আবেদনের নাম এবং এ চালানের নাম একই হয়। 

এছাড়াও মাথায় রাখবেন আপনার পাসপোর্টের আবেদন সময় (NID/জন্ম নিবন্ধন) যেটার নাম্বার দিয়ে আবেদন করেছিলেন এখানে ও সেইটার নাম্বার দিবেন। অন্যথায় চালান গৃহীত হবে না।

৫.এরপর আপনার সুবিধা মত ব্যাংক সিলেক্ট করুন। তবে যদি বিকাশ/ নগদ/ রকেটের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে চান তাহলে সোনালী ব্যাংক সিলেক্ট করে save বাটনে ক্লিক  করতে হবে।

উল্লেখ্য যে,সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে আপনি তিন ভাবে টাকা জমা দিতে পারবেন। 

১.ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে

২.কার্ডের মাধ্যমে।(ভিসা,মাষ্টার)

৩.মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে। ( বিকাশ/নগদ/রকেট/উপায়) 

তো আমি আপনাদের দেখাবো মোবাইল ব্যাংকিং অপশান দিয়ে ই পাসপোর্টের টাকা জমা করার নিয়মঃ

৬. ব্যাংক সিলেক্ট করার পর আপনাদের সামনে উপরের ছবির মত বিকাশ/নগদ/রকেট ইত্যাদির অপশন আসবে। আপনার সুবিধা মত একটি বেছে নিতে পারেন। তবে আমি নগদ দিয়ে পেমেন্ট করে আপনাদের দেখাবো।

৭.নগদে ক্লিক করে আপনার মোবাইল নাম্বার দিয়ে I Agree তে টিক দিয়ে proceed এ ক্লিক করলে, আপনার ফোনে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে। 

কোডটি বসিয়ে, আপনার নগদ একাউন্টের পিন দিয়ে আবার proceed এ ক্লিক করলে এমন ইন্টারফেস আসবে। 


৮.এরপর, আপনি সরাসরি একটি চালান ফর্ম পেয়ে যাবেন।চালানের PDF ফাইল ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিবেন। 

পাসপোর্টের আবেদন ফর্ম জমা দিতে যাওয়ার সময় প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টের সাথে চালান ফর্মিটি ও জমা দিতে হবে। আপনি যে পাসপোর্টের ফি জমা দিয়েছেন চালানটি হল তার প্রমাণ।

পাসপোর্টের ফি জমা দেওয়ার পর,পেমেন্টের মেয়দ ০৬ (ছয়) মাসথাকে। আবেদন করার ছয় মাসের মধ্যে পাসপোর্ট অফিসে যেয়ে আবেদন ফর্ম এবং সকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে। 

১ নং লক্ষণীয় বিষয়ঃ পেমেন্ট করার সময় আপনাকে ১০০% সতর্ক থাকতে হবে যাতে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার কোন ভাবে বন্ধ না হয়ে যায় এবং ডিভাইস থেকে ইন্টারনেট কানেকশন বিচ্ছিন্ন না হয়।

২ নং লক্ষণীয় বিষয়  পেমেন্ট করার সময় যদি দেখেন আপনার একাউন্ট থেকে টাকা কেটে নিয়েছে কিন্তু, লেনদেন সম্পূর্ণ হয়নি, মানে Failed দেখাচ্ছে।

 তাহলে কোন ভাবেই পেজটি ক্লোজ করবেন না /বন্ধ করবেন না। বরং পেজের লিংকটি সেভ করে নিন এবং সেটা আপনার মেসেজ অপশনে/নোটপ্যাডে পেস্ট করে রাখুন।

পরবর্তীতে চালান সংগ্রহের জন্য ঐ লিংকে একটা নাম্বার আছে সেটা আপনার প্রয়োজন হবে।

টাকা জমা দেওয়ার পরেও চালান ডাউনলোড করতে না পারলে করণীয়ঃ

অনেক সময় টাকা পরিষোধ করার পরে ও চালান ডাউনলোড করা যায় না। Transaction failed দেখায় সে ক্ষেত্রে ঐ পেজটাকে কোন ভাবেই Exit বা বন্ধ করবেন না। 

চলমান পেজের লিংকটি কপি করতে হবে। কপিকৃত লিংকটি ম্যাসেজ অপসানে/নোট প্যাডে কপি করুন। 

ওখানে সম্ভবত এমন (২৩১২-৩৮৭৩৫৪৬৮৩২০) একটি  নাম্বার দেখতে পাবেন।  আর এই নাম্বারটিই হল আপনার চালান নাম্বার। নাম্বারটি সেভ করুন

Online calan verification এখানে ক্লিক করে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।

লিংক থেকে যে চালান নাম্বারটি সেভ/কপি করেছিলেন ওই নাম্বারের প্রথম ০৪ টি সংখ্যা চিত্রে দেখানো প্রথম বক্সে এবং পরের ১১ টি সংখ্যা দ্বিতীয় বক্সে বসিয়ে verify তে ক্লিক করুন। 

দেখুন এখানে আপনার চালানটি পাওয়া যাবে। চালানের PDF কপি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিন।

Special Tips: এই পদ্ধতিতে ও যদি চালানটি না পান তাহলে, SPG facebook group https://www.facebook.com/groups/sonalipaymentgateway/?ref=share এ যোগাযোগ করুন। সেখানে আপনি সমাধান পেয়ে যাবেন।

আমাদের শেষ কথাঃ এখন আশাকরি আপনারা ই পাসপোর্ট এর টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন । উপরের লেখাগুলো  স্টেপ বাই স্টেপ ফলো করলে, পাসপোর্টে টাকা জমা দিতে আপনাকে কোন ঝামেলা পোহাতে হবে না ইনশা আল্লাহ।

লেখাটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন এবং যদি পাসপোর্ট বিষয়ক কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।

পাসপোর্ট বিষয়ক আরও তথ্য জানতে ভিজিট করুন।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url