পাসপোর্ট সংশোধন। passport songsodon

পাসপোর্ট সংশোধন ২০২২

By আসিফ ইকবাল বাদশা 

পাসপোর্ট সংশোধন

কাজ করতে গেলে মানুষের ভুল হবে এটাই স্বাভাবিক।পাসপোর্ট করতে যেয়ে ও আমাদের বিভিন্ন তথ্য ভুল হতে পারে। 

অনেক সময় আমাদের মনের অজান্তে ভুল হয় আবার অনেক সময় আমাদের অবহেলার কারণে ও ভুল হয়। 

আর সেই ভুলগুলো সংশোধন না করা পর্যন্ত আমরা বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে থাকি। এজন্য আজকের আলোচনার টপিক পাসপোর্ট সংশোধন। 

সাধারণত পাসপোর্টের ভুলগুলো আমরা বুঝতে পারি কখন, যখন পাসপোর্টটি হাতে পাই। তখন আমরা ভাবি এই ভুল হয়ত আর সংশোধনের কোন উপায় নেই। 

আবার অনেকেই ভাবি সংশোধন করতে প্রচুর সমস্যা এবং ঝামেলার মুখোমুখি হতে হবে।  

এই ভেবে মন খারাপ করে বসে থাকি। অনেকেই তো আবার দালাল/দরবেশ বাবার খপ্পরে পড়ে অনেক গুলো টাকা জলে ঢেলে  দিয়ে বসে থাকি।

ভুল যে ভাবেই হোক না কেন, সেই ভুল সংশোধনের উপায় তো অবশ্যই আছে। আর এত চিন্তা আর মন খারাপ না করে সঠিক নিয়ম অনুস্বরন করলে, দালালের ধোঁকা ছাড়া খুব সহজেই পাসপোর্ট সংশোধন করা যায়। 

তো বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়া কি ভাবে খুব সহজেই পাসপোর্ট সংশোধন করা যায়। 

পাসপোর্ট সংশোধনের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনঃ

বর্তমানে কোনো ধরনের অ্যাফিডেভিট ছাড়াই  পাসপোর্টের নামের বানান ও বয়সের ভুলসহ বেশ কয়েকটি তথ্য সংশোধন করা যায়।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর থেকে এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। 

তবে যদি আপনার পুরা নামটাই পরিবর্তন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এফিডেভিট করতে হবে। 

পাসপোর্ট সংশোধনের হলফনামা/ এফিডেভিটঃ

হলফনামা/এভিডেভিড (নমুনা)

INDEX:

1.পাসপোর্ট সংশোধনের প্রজ্ঞাপন।

2.পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম। 

2.1নাম সংশোধন। 

2.2.স্থায়ী ঠিকানা সংশোধন। 

2.3.জন্ম তারিখ সংশোধন। 

2.4.পেশা সংশোধন। 

2.5.বাবা,মায়ের নাম সংশোধন। 

2.6.বৈবাহিক অবস্থা সংশোধন। 

3. পাসপোর্ট সংশোধন করতে কতদিন সময় লাগে।

4.পাসপোর্ট সংশোধন করতে কত টাকা খরচ হয়।

পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়মঃ

 MRP বা E- passport,  যে পাসপোর্ট ই হোক না কেন, পাসপোর্টের তথ্য সংশোধন করতে হলে  আপনাকে সর্বপ্রথম যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো,  পাসপোর্টটি রি-ইস্যুর জন্য আবেদন করতে হবে।

পাসপোর্ট রি-ইস্যুর এই লিংক http://passport.narail.gov.bd/site/page/510eb724-f12e-4393-bcef-cd2d688a59cf/ থেকে আবেদন  ফর্মটি ডাউনলোড করুন।

পাসপোর্ট রি-ইস্যু/ সংশোধন ফর্ম

পাসপোর্ট সংশোধনের আবেদনের জন্য উপরে দেওয়া লিংকে যেয়ে ফর্মটি ডাউনলোড করার পর নিকটস্হ কম্পিউটারের দোকান থেকে প্রিন্ট করে নিবেন।

ফরমটি  মনোযোগ সহকারে পূরন করবেন।  ফর্মটির ডান পাশে মাঝখান বরারবর "ফি প্রদান সংক্রান্ত তথ্য" আছে। 

আপনি যে ব্যাংকে পাসপোর্ট সংশোধনের জন্য ফি জমা দিয়েছেন, সেই ব্যাংক থেকে আপনাকে একটি স্লিপ দিবে। ফি প্রদান সংক্রান্ত তথ্যের জায়গায় ঐ ব্যাংক স্লিপের তথ্য বসাবেন।

পাসপোর্টে নিজের নাম সংশোধন করতে যা যা লাগবেঃ

  • ভোটার আইডি কার্ড (NID)।
  • জন্ম নিবন্ধন ( Online English Version)।
  • জে এস সি JSC/এস এস সি(SSC) পরীক্ষা সম মানের সার্টিফিকেট। 

[ বিঃদ্রঃ নামের সামনের বা পিছনের অংশ, পদবী, মোঃ,মোহাম্মদ, এইগুলো এমনিতেই আবেদন করে সংশোধন করা যাবে। কিন্তু পুরা নামটাই পরিবর্তন করতে হলে, অবশ্যই হলফনামা বা এফিডেভিট করতে হবে।]

পাসপোর্টের স্হায়ী ঠিকানা সংশোধন করতে যা যা লাগবেঃ

যদি কেউ পাসপোর্টের স্থায়ী ঠিকানা (parmanant address) সংশোধন করতে চান তাহলে আবার নতুন করে পুলিশ প্রতিবেদনে লাগবে। 

তবে বর্তমান ঠিকানা (present address)পরিবর্তন করার জন্য এমন কোন ধরা বাঁধা নিয়ম নেই।

পাসপোর্টের জন্ম তারিখ সংশোধন করতে হলে যা যা লাগবেঃ

  • ন্যাশনাল আইডি কার্ড।
  • জন্ম নিবন্ধন ( Online English Version),
  • জে এস সি JSC/এস এস সি(SSC) পরীক্ষা সম মানের সার্টিফিকেট। 
  •  নিকাহনামা (বিবাহিত হলে)।

[ বিঃদ্রঃ জন্ম তারিখ সর্বোচ্চ ০৫ বছর পর্যন্ত সংশোধন করা যায়। ]

পাসপোর্ট এর পেশা সংশোধন করতে যা যা লাগবেঃ

  • সরকারী চাকুরীজীবিদের জন্য  NOC (No Objection Certificate)  / (GO Government Order)। 
  • কৃষি পেশার ক্ষেত্রে জমির পর্চার ফটোকপি। 
  • অন্যান্ন পেশার ক্ষেত্রে যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন সেখানকার প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্রের ফটোকপি।

পাসপোর্টে বাবা/ মায়ের নাম সংশোধন করতে যা যা লাগবেঃ

  • নিজের ভোটার আইডি কার্ড বা NID Card.
  • জে এস সি (JSC), এস এস সি (SSC) পরীক্ষা  সম মানের সার্টিফিকেট।
  • বাবা, মায়ের ভোটার আইডি কার্ড বা NID Card.

পাসপোর্টের বৈবাহিক অবস্থা সংশোধন করতে যা যা লাগবেঃ

যদি কেউ পাসপোর্ট এর বৈবাহিক অবস্থা সংশোধন  করতে চান, তাহলে তাকে আবেদন ফর্মের সাথে নিকাহনামা পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে।

সর্বশেষ,,পূরণকৃত আবেদন ফর্মটি এবং অন্যান্ন প্রয়োজনীয়  সকল ডকুমেন্টস একসাথে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিবেন। 

পাসপোর্ট সংশোধন করতে কত দিন সময় লাগেঃ

সাধারণত পাসপোর্ট সংশোধন হতে ২১ দিনের মত সময় লাগে। ২১ দিনের মধ্যে আবেদন ফর্মে দেওয়া মোবাইল নাম্বার/ জি মেইলে একটি SMS/Mail এর মাধ্যমে আপনাকে পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য বলা হবে।

 এরপর আপনি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আপনার পাসপোর্ট  সংগ্রহ করতে পারবেন।

পাসপোর্ট সংশোধন করতে কত টাকা খরচ হয়ঃ

পাসপোর্ট সংশোধনের জন্য, আবেদন ফর্ম জমা দেওয়ার সময়  রি-ইস্যু ফরম এবং নতুন আবেদনপত্র সত্যায়িত করে অফিসে জমা দিতে হবে। 

পাসপোর্ট সংশোধনের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর দ্রুত বা ০৭ দিনের মধ্যে যদি পাসপোর্ট পেতে চান তাহলে ৬,৯০০ টাকা জমা দিতে হবে। 

আর সাধারণ সময় মানে ২১ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেতে চাইলে  ৩,৪৫০ টাকা জমা দিতে হবে।

নোটঃ যে কোন সরকারি ব্যাংকে পাসপোর্ট সংশোধনের ফি জমা দেওয়া যায়।  যেমনঃ ট্রাস্ট ব্যাংক,  এশিয়া ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক,সোনালী ব্যাংক ইত্যাদি।

শেষ কথাঃ এখন আশাকরি, আপনারা এখন ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন যে, কিভাবে  পাসপোর্ট সংশোধন করতে হয়, পাসপোর্ট সংশোধন করতে কত দিন লাগে এবং পাসপোর্ট সংশোধন  করতে কত টাকা খরচ হয়।

পাসপোর্ট সম্পর্কিত আরো তথ্য যানতে এই পোষ্টের নিচে দেওয়া লিংকে ভিজিট করুন।




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url