মোবাইল ফোন কেনার আগে যা যা জানতে হবে।

মোবাইল ফোন কেনার আগে যা যা জানতে হবে।

বর্তমান সময়ে মোবাইল আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। বলা যায় মোবাইল ফোন এখন আমাদের শরীর একটি অঙ্গ হয়ে উঠেছে ।  মোবাইল ছাড়া আমরা আমাদের একটি দিনের কথা ও চিন্তা করতে পারিনা। তাই আমাদের প্রত্যেকের যানা দরকার মোবাইল ফোন কেনার আগে কি কি যানতে হবে।

মরা সারাদিনে যেখানেই যাই না কেন, মোবাইল সবসময় আমাদের সাথেই থাকে। কথা বলা, ছবি তোল, গান শোনা থেকে শুরু করে ইন্টারনেট ব্রাউজিং সহ সকল কাজে মোবাইলের জুড়ি নাই। 

বর্তমান দশকে  স্মার্টফোন কোন বিলাসিতা নয়, বরং যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য অত্যাবশ্যকীয় জিনিষ হয়ে উঠেছে। 

তবে আমরা বেশিরভাগই জানিনা স্মার্টফোন কেনার আগে কি কি বিষয়ে ধারণা থাকা আবশ্যক । স্মার্টফোন কেনার আগে কিছু গোপন  বিষয় আছে। বাজেট এবং প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে এই ছোট ছোট জিনিস গুলো অনুসরণ করলে আপনি, আপনার সাধ্যের মধ্যে পেয়ে যাবেন, সময়ের সব থেকে উপযুক্ত স্মার্ট ফোনটি  ।  

মোবাইল ফোন কেনার আগে যা যা জানতে হবে।
মোবাইল ফোন কেনার আগে যা যা জানতে হবে। 

তো চলুন বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব, মোবাইল ফোন কেনার আগে যা যা জানতে হবে। 


INDEX:

  • মোবাইল ফোনের বাজেট/ দাম,
  • মোবাইলের প্রসেসর, 
  • RAM /র‍্যাম,
  • ROM /রম,
  • অপারেটিং সিস্টেম, 
  • ব্যাটারি, 
  • ক্যামেরা, 
  • মোবাইল ডিসপ্লে,
  • ডিজাইন, 

তো প্রথমে আপনাকে মনস্থির করতে হবে, আপনি কি অনলাইন থেকে ফোন কিনবেন, নাকি সশরীরে কোন দোকান থেকে, নিজে গিয়ে কিনবেন। 

অনলাইন থেকে ফোন কিনলে আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। আর যদি আপনি দোকান থেকে কিনতে চান, তাহলে নিচের বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। 

বাজেট/দামঃ

মোবাইল ফোন কেনার জন্য সর্বপ্রথম যে বিষয়টি ভাবতে হবে সেটা হচ্ছে ফোনের জন্য আপনার বাজেট কত টাকা। তারপর দেখতে হবে এই বাজেটের ভিতর কোন কোম্পানি কেমন ফিচার দিচ্ছে। সেটাই হবে আপনার জন্য সবথেকে ভালো পন্থা।

আপনার বাজেট যদি একেবারে কম থাকে তাহলে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সকল আপডেট ফিচার আপনার ফোনটিতে পাবেন না। সেক্ষেত্রে অনলাইনে একটু বেশি খোঁজাখুঁজি করে ওই দামের ভিতরে কোন কোম্পানি তুলনামূলক ভালো ফিচার দিচ্ছে সেটা খুজে বের করতে হব।

তবে যদি আপনার কাছে পর্যাপ্ত টাকা থাকে । বাজেটের লিমিটেশন না থাকে। সে ক্ষেত্রে আপনি ভাল কোন কোম্পানির সবথেকে আপডেট মডেলের ফোনটি নিয়ে নিতে পারেন। তখন আপনার পছন্দ করা ও খুবই সহজ হবে আর সময়ের সবথেকে লেটেস্ট টেকনোলজির ফোন থাকছে আপনার কাছে। 

প্রসেসরঃ

 প্রসেসর হল কম্পিউটার/ মোবাইলের অন্যতম প্রধান হার্ডওয়ার। একে মূলত CPU- (central Processing Unit) সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বলে। এটিকে স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের ব্রেন বলা চলে। তাহলে এখন বুঝতেই পারছেন প্রসেসর এর গুরুত্ব কতখানি। 

স্মার্ট ফোনের প্রসেসর যত ভালো হবে ফোনের ডাটা তত দ্রুত প্রসেস হবে। একটা কথা সবসময় মাথায় রাখবেন প্রসেসর ভালো হলে অ্যাপস দ্রুত ওপেন  হবে, বড় বড় স্টোরেজের গেম গুলো খুব ভালোভাবে রান করবে এবং ফোন  সহজে স্লো হবে না। 

মোবাইলের ক্ষেত্রে স্নাপড্রাগণ সিরিজের চিপসেটই পারফরমেন্সের দিক থেকে সেরা। আর আপনি যদি রেগুলার গেমিং করতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনাকে ভালো প্রসেসর এর একটি ফোন চয়েজ করতে হবে। 


র‍্যামঃ

র‍্যাম হল অস্থায়ী মেমোরি। প্রসেসর ডেটাকে অস্থায়ীভাবে র‍্যাম এ জমা রাখে। ফোনের র‍্যাম যত বেশি হবে, একসঙ্গে আপনি ফোনে তত অ্যাপস ইন্সটল করে রাখতে পারবেন এবং র‍্যাম যত বেশী হবে,আপনার ফোন ততই স্মুথলি কাজ করবে । 


র‍্যাম যত কম হবে আপনার ফোন তত দ্রুত হ্যাং হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। বর্তমানে যে কোন দামের মোবাইলে ১ জিবি র‍্যাম পাওয়া যায়। মাঝামাঝি দামের ফোন গুলোতে ২ থেকে ৪ জিবি র‍্যাম পাওয়া যায়। আবার এখন তো কিছু কিছু ফোনে ৮ জিবি পর্যন্ত র‍্যাম  থাকে। ফোন কেনার আগে অবশ্যই ভেবে নিবেন আপনার কি পরিমান র‍্যাম প্রয়োজন। আপনি যদি হেবি ইউজার বা গেমার হন, তাহলে একটু বেশি র‍্যামের ফোন নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

রমঃ
রম বা স্টোরেজ যা মূলত এসডি কার্ড/মেমোরি কার্ড  এর মত কাজ করে। এতে আপনি ছবি, ভিডিও, অ্যাপস, ফাইল ইত্যাদি রাখতে পারবে। বর্তমানে যে কোন বাজেটের ফোনে 16gb রম পাওয়া যায়। 

কিন্তু রম একটু বেশি নেওয়াই ভালো। ৩২/৬৪ জিবি হল পারফেক্ট রম। বর্তমানে কিছু কিছু ফোনে 128gb বা তার থেকে বেশি রম দেয়। তবে আপনি আপনার প্রয়োজন মত নিয়ে নিতে পারেন। 

অপারেটিং সিস্টেমঃ
স্মার্টফোন পছন্দ করার পূর্বে ফোনটির অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে জেনে নেওয়া অতীব জরুরী। অপারেটিং সিস্টেম এর কথা বলতে গেলে সর্বপ্রথম ই মাথায় আসে অ্যান্ড্রয়েডের কথা। 

বর্তমান বিশ্বের সবচাইতে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড। তাই একটি এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম পরিচালিত ফোন বেছে নেওয়ায় আপনার জন্য সবথেকে বুদ্ধিমানের কাজ হবে। 

ব্যাটারিঃ

মোবাইল ফোন কেনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ব্যাটারি। আপনাকে দেখতে হবে মোবাইলের ব্যাটারি কত এম্পিয়ার। চেষ্টা করবেন 4000 -5000 এম্পিয়ারের ব্যাটারি ব্যাকআপের ফোন কেনার। কারণ ব্যাটারি  আম্পায়ার যত বেশি হবে আপনার ফোনের চার্য ও ততবেশি স্থায়ী হবে। 

ক্যামেরাঃ

স্মার্টফোন কিনতে চান তাহলে ক্যামেরার দিকে আপনাকে অবশ্যই নজর দিতে হবে। বর্তমান সময় মানুষ একটি ফোন হাতে নিলে সর্বপ্রথম দেখে তার ক্যামেরা। ফোনটিতে কেমন ছবি ওঠে কেমন ভিডিও হয় ইত্যাদি।

 তবে আপনার যদি টিক টক ভিডিও বানানোর শখ থাকে,তাহলে একটু ভালো ক্যামেরার ফোন কিনতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনাকে মেগাপিক্সেল এবং রেজুলেশনের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। 

তবে পিছনে ১৩/১৬ সামনে ৮ মেগাপিক্সেল দিয়ে মোটামুটি ভালো রেজুলেশনের ছবি ও ভিডিও পেয়ে যাবেন। এর থেকে বেশি মেগাপিক্সেল নিতে গেলে আপনাকে একটু বেশি টাকা গুনতে হবে। 

মোবাইলের ডিসপ্লেঃ

একহাতে কম্ফোর্টেবল ভাবে ব্যবহার করার জন্য ৫.৫ - ৬.৫ ইঞ্চির ডিসপ্লে ই পারফেক্ট। আমাদের  মধ্যে বেশিরভাগ লোকই ফোন কেনার আগে শুধুমাত্র ডিসপ্লে সাইজ দেখেন । কিন্তু সাইজের পাশাপাশি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ডিসপ্লে রেজুলেশন। 

ফুলএইচডি(১৯২০-১০৮০পিক্সেলরেজুলেশন মোটামুটি ভালো। তবে ফুল এইচডি বা কোয়াড এইচডি (২৫৬০-১৪৪০ পক্সেল) আরো ভালো সার্ভিস দিয়ে থাকে। 

এছাড়া ও দেখতে হবে হাই লাইটে অর্থাৎ দিনের বেলা বাইরের চড়া রোদে ডিসপ্লেতে কেমন দেখা যায়। মুলত ফোনের ব্রাইটনেস হাইলাইটে কেমন দেখায় তা দেখতে হবে।

স্কিন কতটা কালারফুল সেটাও দেখতে হবে। এলসিডি এর চাইতে এমোলেট অথবা সুপার এমোলেট ডিসপ্লেতে অনেক ভালো কালার পাওয়া যায়। 

ডিজাইন ঃ

ডিজাইন মূলত ক্রেতার উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ যে মোবাইলটি কিনবে তার উপর। ভালো কোয়ালিটির কথা চিন্তা করলে অবশ্যই গ্লাস অথবা মেটালের বডির ফোন নির্বাচন  করতে হবে। 

বাজেট যদি কম হয় সে ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের বডির ফোন নিতে পারেন। এখনকার সময়ে বিভিন্ন কালার এবং ডিজাইনের ফোন পাওয়া যায় । এর মধ্য থেকে আপনাকে বেছে নিতে হবে আপনার পছন্দের ফোনটি।

   আমাদের শেষ কথাঃ এখন আশা করি, আপনারা খুবই ভালভাবে বুঝতে পেরেছেন যে, মোবাইল ফোন কেনার আগে কোন কোন বিষয়ের উপর অবশ্যই নজর রাখতে হবে। 

আর উপরের এই বিষয় গুলোকে মাথায় রেখে , আপনার বাজেট বা সাধ্যের মধ্যে বেছে নিন  বাজারের সবথেকে সেরা স্মার্টফোনটি। 


Next Post
No Comment
Add Comment
comment url